অধ্যক্ষের বাণী
বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম এলাকার সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত একটি জেলা দিনাজপুর। সবদিক থেকে বলা চলে অনগ্রসর একটি জেলা। এই জেলারই কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডাঃ এম আমজাদ হোসেন স্যারের ভাবনা প্রসূত-একটি বাক্য “আর নয় থেমে থাকা”। যার ফলশ্রুতিতে ২০০০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন একটি ফাউন্ডেশন। যার নামকরণ করা হয় “এবি ফাউন্ডেশন”। এই ফাউন্ডেশনের আওতায় পরিচালিত বহুমুখী কার্যক্রমের মধ্যে প্রথম কার্যক্রম হিসেবে প্রথম পথ চলা শুরু করে “আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল”। ২০০১ সালে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করার পর প্রথম পর্যায়ে স্কুল শাখা ও দ্বিতীয় পর্যায়ে কলেজ শাখা তৃতীয় পর্যায়ে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পরিচালনা পর্ষদের সঠিক সুচিন্তিত নিদের্শনা ও শিক্ষকগণের আন্তরিকতা মিশ্রিত পাঠদানে শিক্ষার্থীরা ক্রমান্বয়ে যে সফলতা বয়ে এনেছে, দেশের উত্তরাঞ্চলের শিক্ষা বিপ্লবে যে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, তা একটি শিক্ষিত জনশক্তি গঠনের মধ্য দিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করতে যথার্থ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
এবি ফাউন্ডেশনের আওতাধীন “আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজটি” শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী ও স্থানীয় পর্যায়ের অসংখ্য শুভানুধ্যায়ীদের শুভ কামনা, দোয়া ও সহযোগিতা এবং শিক্ষব্রতী শিক্ষার্থীদের প্রখর ইচ্ছাশক্তি, অক্লান্ত পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আধুনিক যুগোপযোগী গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষা বিস্তারের যে বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছে তা সত্যিই অভাবনীয়।
এমন সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে এবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ আমজাদ হোসেন (স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত) মহোদয় যুগোপযোগী শিক্ষার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মহোদয়ের লক্ষ্য শিক্ষিত জনশক্তি গঠনের মাধ্যমে দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা ও সমৃদ্ধিতে ভরিয়ে দেওয়া এবং প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিশ্বের দরবারে দেশের সম্মানকে সমুন্নত রাখা।
এখন আমরা বলতে পারি যে, ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে স্কুল এন্ড কলেজ প্রশাসনকে যুগোপযোগী তথ্য ও প্রযুক্তি সমৃদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিশ্চিত করতে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ আমজাদ হোসেন (স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত) মহোদয় সফল হয়েছেন।
সুষম শিক্ষা বিস্তারের প্রতিষ্ঠানটি প্রথম শিক্ষাবর্ষে ২০০১ আমরা নার্সারী থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালূ করেছিলাম। সম্মানিত অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে ২০০৩ সালে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত এবং ২০০৪ শিক্ষাবর্ষে আমরা 8ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করেছি। ২০০৪ সালে নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল হিসেবে সরকার কর্তৃক অনুমতি পায়। ২০১০,২০১১ এবং ২০১২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পর পর ৩ বার দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে ৩য় স্থান এবং ২০১৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ জিপিএ-5 পেয়ে শিক্ষাবোর্ডে প্রথম স্থান অর্জন করে। পরবর্তী ২০১৪ সালে দিনাজপুর বোর্ডে ৪র্থ ও ২০১৫ সালে সালে ৬ষ্ঠ স্থান অর্জন করে। ২০১৪ সালে স্কুল পর্যায়ে থেকে কলেজ পর্যায়ে উন্নীত করে কলেজ শাখা চালূ করা হয়। ২০১৬ সালে কলেজ শাখার প্রথম ব্যাচ চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাসহ পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম গুলিতেও উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আশাতীত সাফল্য বয়ে নিয়ে আসে। উল্লেখ ২০১৬ সালে সৃজনশীল মেধা অন্বেষন প্রতিযোগিতায় দৈনন্দিন বিজ্ঞান বিভাগে অত্র প্রতিষ্ঠানের 8র্থ শ্রেণির ছাত্র দেশ সেরা নির্বাচিত হয় এবং ২০২০ সালে ৯ জন ছাত্র জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট স্কাউট এ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। করোনা অতিমারীর কারণে গত ১৮ মার্চ ২০২০খ্রি. থেকে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমাদের এই দীর্ঘ সময় অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়েছি।
এভাবে বিভিন্নমুখী সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ধীরে ধীরে “আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজটি” দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থান দখল করে নেবে বলে আমার বিশ্বাস। এই স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জ্ঞানের ও গুণের আলো ছড়িয়ে পড়ুক দেশে ও বিদেশে, ঐকান্তিক চেষ্টার মাধ্যমে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আল্লাহ হাফেজ।
লে. কর্নেল কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ এইসি (অবঃ)
অধ্যক্ষ
আমেনা- বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ
চিরিরবন্দর, দিনাজপুর।